কে এম মিঠু, গোপালপুর :
টাঙ্গাইলের গোপালপুরে ত্রিশ লক্ষ শহীদ স্বরণে বন ও পরিবেশ মন্ত্রনালয়ের বৃক্ষচারা বিতরণ কর্মসূচি ব্যাপক বিতর্কের মুখে পড়েছে। বিনামূল্যে সরবরাহ করা নিন্মমানের এসব বৃক্ষচারা অনেক শিক্ষার্থীরা গ্রহন করেনি।
আজ বুধবার দুপুরে গোপালপুর উপজেলা নির্বাহী অফিসার দিলরুবা শারমিনের সরকারি বাসভবনের সামনে দেশীয় জাতের বৃক্ষচারার পরিবর্তে বিপুল পরিমান নিন্মমানের বিদেশী বনজ বৃক্ষচারা পড়ে থাকতে দেখা যায়। ফলে সরকারি এ কর্মসূচি নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন এলাকাবাসিরা।
জানা যায়, কর্মসূচির আওতায় গোপালপুর উপজেলার ১৬১টি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ৭টি কলেজ এবং ৭২টি উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও মাদরাসায় ১৩ হাজার ৪৪০টি বৃক্ষচারার চাহিদার কথা বলা হয়। গত মঙ্গলবার মধুপুর রেঞ্জ অফিস থেকে বনবিভাগ দেশীয় জাতের বৃক্ষচারার পরিবর্তে ১৯ হাজার ৬৭৮টি বিদেশী বনজ বৃক্ষচারা সরবরাহ করা হয়। দেশীয় জাতের বৃক্ষচারা সরবরাহের কথা থাকলেও বন বিভাগ আকাশমনি, মেহগিনি, গর্জনসহ বিদেশী গাছের চারা সরবরাহ করে। এসব চারা আকারে খুবই ছোট ও রুগ্ন। পলিথিনে মোড়ানো এসব বনজ বৃক্ষচারা এতটাই ক্ষুদ্রকার ও দুর্বল যে তা লাগানোর অনুপযোগি। অধিকাংশ চারাই দৈর্ঘে চার থেকে ছয় ইঞ্চি।
গত মঙ্গলবার উপজেলা প্রশাসন কর্তৃক বিতরণ করা এসব ক্ষুদ্রকার ও রুগ্ন চারা রোপনের পর পরই বৃষ্টি ও বাতাসের ঝাপটায় বিনষ্ট হয়ে গরু ছাগলের মুখে চলে যাচ্ছে। অনেক শিক্ষার্থী উপজেলা শিক্ষা অফিস থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে চারা নেয়ার পর স্কুল প্রাঙ্গনে না লাগিয়ে পথিমধ্যে ফেলে যায়। ফলে সরকারের বৃক্ষ চারা রোপনের উদ্দেশ্য ব্যাহত হচ্ছে।
গোপালপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার রফিকুল ইসলাম জানান, বন বিভাগের সরবরাহ করা চারা এতোটাই ছোট আর রুগ্ন যে, তা লাগানোর উপযোগি নয়। শিক্ষার্থীরা এসব চারা নিতে অনাগ্রহ দেখাচ্ছে। বনজের পরিবর্তে ফলদ চারা দিলে শিক্ষার্থীরা হয়তো আগ্রহী হতো।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মোস্তফা কবীর জানান, চারা আকারে খুবই ছোট। এসব চারা নার্সিং করা সমস্যা হবে।
মধুপুর বন সম্প্রসারণ কেন্দ্রের রেঞ্জ কর্মকর্তা মঞ্জুরুল ইসলাম জানান, গত জানুয়ারি-ফেব্রæয়ারিতে বীজ থেকে এসব চারা তৈরি। ফলদ চারা নার্সারীতে কম ছিল। ফলে বিদেশী প্রজাতির বনজ চারা সরবরাহ করা ছাড়া গত্যন্তর ছিলনা। সাধারণত চারার বয়স এক বছর পার না হলে বৃক্ষ চারা লাগানো অনেকটাই অনিরাপদ। কিন্তু সরকারের উর্ধতন কর্তৃপক্ষের চাপে দ্রুত এসব ক্ষুদ্রকার চারা সরবরাহে বাধ্য হয়েছেন।